
জেলখানা
"নরকের থানা"
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ানক জেলখানা: CECOT (Ce Cot) — যেখানে সময় থেমে থাকে, আর মানসিকতা গলে যায়
CECOT, যার পূর্ণরূপ Centro de Confinamiento del Terrorismo, হলো এল সালভাদরের একটি মেগা জেলখানা, যা বিশ্বের ইতিহাসে ভয়াবহতা ও নিষ্ঠুরতার এক ভয়ংকর উদাহরণ। এই কারাগারটি ২০২৩ সালে চালু হয় এবং এতে একসাথে ৪০,০০০ গ্যাং সদস্য, সন্ত্রাসী ও ভয়ঙ্কর অপরাধীকে রাখা হয় — তবে শাস্তিটা শুধু শারীরিক নয়, বরং সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মানসিক! প্রতিটি বন্দি জানালাবিহীন সেলে ২৪ ঘণ্টা আটকে থাকে। দিনের আলো, প্রকৃতির শব্দ, বা নিজের ছায়াও তারা দেখে না। কারো মুখে কথা বলার অধিকার নেই। টানা দিনের পর দিন দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে থেকে, অনেকে নিজের অস্তিত্ব ভুলে যায়।
CECOT-এ বন্দিদের একমাত্র "চলাফেরা" হয় একটি দীর্ঘ, অন্ধকার করিডোরে — তাও দিনে মাত্র ৩০ মিনিট, তীব্র নিরাপত্তার মধ্যে। সেখানে কোনো বিছানা নেই, শুধু কংক্রিটের মেঝে। ঘুম, খাবার, প্রস্রাব — সবকিছু একই জায়গায়। বন্দিরা অনেকেই বলে, তারা মাঝে মাঝে 'ভয়ের গলা' শুনতে পায় — ছায়ার মতো কিছু দেখতে পায়। এই অভিজ্ঞতা সত্যি, নাকি মানসিক বিকার – তা বোঝা কঠিন, কারণ এখানে পাগল হওয়াটাই স্বাভাবিক।
CECOT-এ ‘Solitary Confinement’ এতটাই কঠোর, যে বিজ্ঞানীরা বলছেন মাত্র ১৫ দিন একা থাকার পর মানুষ ধীরে ধীরে hallucination, paranoia এবং identity disorder এ ভুগে পাগল হয়ে যেতে পারে। অনেকে নিজের শরীরের প্রতি আঘাত করে, কারণ এটিই তখন "বেঁচে থাকার একমাত্র অনুভব"। যুক্তরাষ্ট্র থেকেও ইতিমধ্যে শতাধিক সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্যকে এই জেলে পাঠানো হয়েছে, যার ফলে আন্তর্জাতিকভাবে একে বলা হচ্ছে "নরকের থানা"।
CECOT-কে কেন্দ্র করে জাতিসংঘসহ বহু মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে এল সালভাদরের সরকার বলছে, “এটাই হচ্ছে ন্যায্য বিচার”। প্রশ্ন উঠছে — যেখানে আলো নেই, শব্দ নেই, আশা নেই — সেখানে মানুষ কি আর মানুষ থাকে? নাকি শুধু একটা নীরব আত্মা হয়ে পড়ে থাকে, চিরতরে...